https://www.somoyerdarpan.com/
1487
bangladesh
প্রকাশিত : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৪
প্রতিদিন দিবাগত রাত ১২টার দিকে গ্যাস আসে। তা-ও ঠিকমতো চুলা জ্বলে না। থাকে দিবাগত রাত তিনটা থেকে ভোররাত চারটা পর্যন্ত। চারটার পর গ্যাসের চাপ কমতে থাকে এবং একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। ছয় মাস ধরে লক্ষ্মীপুরে এমন গ্যাস–সংকট চলছে। এতে গৃহস্থালির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষকরে গ্যাস-সংকটে রোজায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকেরা।
তবে এ সমস্যার অতিদ্রুত সমাধান করা হচ্ছে না। সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে কতদিন সময় লাগবে জানায়নি বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, ফেনী থেকে লক্ষ্মীপুরে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। লক্ষ্মীপুর সরবরাহ এলাকা শেষে অবস্থিত। এ এলাকায় গ্যাস পৌঁছানোর আগেই লাইনের গ্যাস শেষ হয়ে যায়। প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে আসা গ্যাস সরবরাহের জন্য লাইন সংস্কার না করলে সমস্যার সমাধান হবে না।
রোজায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ ১৩ মার্চ বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আবেদন করেছেন।
মামুনুর রশীদ জানান,
“ ছয় মাস ধরে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গভীর রাত থেকে গ্যাস থাকে না। এতে কষ্টে আছেন আবাসিকের গ্রাহকেরা। এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন বাণিজ্যিক খাতের গ্রাহকরা। সেইসাথে সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় পরিবহন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নীরবে অর্থনীতির গতি কমিয়ে দিচ্ছে এই গ্যাস–সংকট”।
লক্ষ্মীপুর বাখরাবাদ সূত্রে জানা গেছে,
লক্ষ্মীপুরে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় আট হাজার ঘনফুট। গত রোববার সরবরাহ হয়েছে দুই হাজার ঘনফুটের কম গ্যাস। গত ছয় মাস থেকে এ অবস্থা চলতেছে।
এ এলাকার রিতা আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী জানান,
“আগে প্রতিবছর শীতের সময়ে গ্যাসের সংকট থাকত। কিন্তু এবার ছয় মাস ধরেই গ্যাসের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত অল্প গ্যাস পাওয়া যায়। অনেকে রাত জেগে এ সময়ের মধ্যে উঠে রান্নার কিছু কাজ সারেন। দিনের বেলায় কোনো গ্যাস থাকে না। অনেক সময় বাধ্য হয়ে ইলেকট্রিক চুলায় রান্নার কাজ করতে হচ্ছে”।
আরও এক গৃহিণী বলেন,
“ আজ বুধবার ভোররাত চারটার সময় নিবু নিবু অবস্থায় লাইনে গ্যাস ছিল। তবে তা দিয়ে কোনো রান্না করা যায়নি। একপর্যায়ে কমতে কমতে ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস। এরপর আজ বেলা একটা পর্যন্ত আর লাইনে গ্যাস আসেনি। দিবাগত রাত ১২টার দিকে আবার গ্যাস আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন এমন নিয়মেই আসে।”
লক্ষ্মীপুরের বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, “গ্যাসের সরবরাহ দ্রুত বাড়ানোর কোনো উপায় এ মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই। গ্যাসের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। ফেনী থেকে লক্ষ্মীপুরে গ্যাসের মূল লাইন এসেছে। এ লাইন থেকে ফেনী ও নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে ফেনী-লক্ষ্মীপুর সড়কের ১৩টি সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এরপর শেষ প্রান্তে লক্ষ্মীপুর। শেষ প্রান্তে গ্যাস শেষ হয়ে যায়।”
তবে সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।