https://www.somoyerdarpan.com/
3520
bangladesh
প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০২৫ ১২:২৬
ছবি: সংগৃহীত
ফেনীর পরশুরামে বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে পাঠদান ও পরীক্ষার স্থগিত করা হয়েছে।
'ফুলগাজীর ৯৯টি ও পরশুরামের ৩২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র চালু করেছেন জেলা প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে বুধবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে মুহুরি নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে ১৩.৩৩ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে বুধবার সকাল থেকে ফেনী-পরশুরাম সড়কে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও পরশুরাম উপজেলা সদরের সাথে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয় যেতে শুরু করেছে।
ফেনীতে রেকর্ড বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফেনীর পরশুরামের মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) বিকেল থেকে মুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ফসলি জমি, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নে সিলোনিয়া নদীর মেলাঘর, গদানগর ও মনিপুর গ্রামে ৩টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও চিথলিয় ইউনিয়নের মুহুরী নদীর ধনীকুন্ডা, জঙ্গলঘোনা,উত্তর শালধর ও অলকা গ্রামে বাঁধ ভেঙে ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
অন্যদিকে বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের চারিগ্রামে নদীর বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মুহুরি নদীর ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নে দেড়পাড়া এলাকায় দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়।
এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থানে নদীর পানি বেড়িবাঁধ গড়িয়ে লোকালয়ে ঢুকছে। এতে নিম্মাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
উপজেলার মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল মান্নান বলেন, দুপুর থেকে সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি গড়িয়ে সুবার বাজারের দক্ষিণাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৩৩ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সোমবার (০৬ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ফেনী উজানে ভারতের ত্রিপুরা ও ফেনীতে এখনো ভারি বর্ষণ হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রেজ রিডার নেপাল সাহা বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার পর থেকে মুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে বিপদ সীমার ওপরে ১৩ দশমিক ৩৩ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থা রয়েছে।
দুর্যোগকবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান ও পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন সমুহ আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে জেলা প্রশাসনেন একটি টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।