https://www.somoyerdarpan.com/
2308
bangladesh
প্রকাশিত : ০৮ জুলাই ২০২৪ ১৬:৩২
সিলেটের কাস্টমস কমিশনার এনামুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হকের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন এ আবেদন করেন।
এর আগে একই আদালত গত ৪ জুলাই এ আসামির ৯ তলা ভবন, ৬টি ফ্ল্যাট ও ৭১ শতাংশ স্থাবর সম্পদ ক্রোকাদেশ দেন।
ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে ঢাকা বসুন্ধরায় ৩ কাঠা জমির ওপর নির্মিত ৯ তলা ভবন ও গাজীপুরে ৭১ শতাংশ জমি এবং ঢাকার মোহাম্মাদপুর ৪টি, গুলশানে ১টি এবং বাড্ডায় একটি করে ফ্ল্যাট।
ক্রোকের আবেদনে বলা হয়েছিল, আসামী মোহাম্মদ এনামুল হক, কমিশনার, বাপামস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট কর্তৃক ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার ১০৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অপরাধে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭/১১ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে, আসামী তার মালিকানাধীন ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পতি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে অত্র মামলার ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল, বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় হতে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সকল উদ্দেশ্যই বার্থ হবে। তাই, অত্র মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে চার্জশীট দাখিলের পর বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সরকারের অনুকূলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের সুবিধার্থে তথা সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে নিম্নে বর্ণিত স্থাবর সম্পত্তিসমূহ ক্রোক করা একান্ত প্রয়োজন।
এনামুল হকের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এনামুল হকের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে দুদক। একই বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। রাজধানীর রামপুরা ও আফতাবনগরসহ বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে জমি ও ফ্ল্যাট কেনা এবং অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এনামুল হক দুদককে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ ৩১ হাজার ৯৩৩ টাকার সম্পদের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু সংস্থাটির অনুসন্ধানে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার ১০৭ টাকা অবৈধ বলে প্রমাণিত হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এই কাস্টমস কর্মকর্তা অবৈধ আয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, ফ্ল্যাট, বাণিজ্যিক ভবনে ফ্লোরসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার গুলশানে ৩ কাঠা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৩ কাঠা ও একই স্থানে আরও তিন কাঠা প্লট কেনেন এনামুল। বসুন্ধরার একটি প্লটের ওপর নির্মিত নয় তলা ভবনও রয়েছে তার। এই ভবনের নির্মাণ ব্যয় দুই কোটি টাকারও বেশি বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ হয়েছে।
এ ছাড়াও চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে ২০ কাঠা ও ফেনীর সোনাগাজীর দুইটি স্থানে জমি কেনেন বলে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে। অন্যদিকে দুদক বলছে, ঢাকার কাকরাইল, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক ভবনে ফ্লোর নিজ নামে ও স্ত্রীর নামে কিনেছেন এনামুল।
২০১৬ সালে গাজীপুরের চন্দনায় ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ৫ কাঠা জমি কিনেছেন এনামুল। এ ছাড়া তার নামে ঢাকার শ্যামলী স্কয়ার ও সন্ধানী টাওয়ারেও দুটি বাণিজ্যিক ফ্লোর পাওয়া যায় অনুসন্ধানকালে।
এজাহারে বলা হয় এনামুল হক ১৯৯৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থাবর সম্পদ ২১ কোটি ৫২ লাখ ৫৩ হাজার ১২ টাকা ৫৮ লাখ ৩২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ ভোগ দখলে রাখেন। যার মধ্যে তিনি নিজেকে ঋণগ্রস্ত বলে দাবি করেন। তবে অনুসন্ধানে ঋণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।