https://www.somoyerdarpan.com/

1336

bangladesh

নতুন কারিকুলাম চালু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৩:৫৯

ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের আনন্দময় পরিবেশে পড়ানোর পাশাপাশি মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে দক্ষতা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে শেখাতে নতুন কারিকুলাম চালু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ২০২৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের তিনটি শ্রেণিতে নতুন এই কারিকুলাম চালু করা হয়। চলতি বছরে সেই কারিকুলামের পরিসর বৃদ্ধি করা হয়। নতুন এই কারিকুলামে পক্ষে বিপক্ষে নানান যুক্তি দিচ্ছেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। রয়েছে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্বও। তবে সবকিছু ছাপিয়ে অন্তত একটি পরীক্ষা রাখার জোর দাবি অভিভাবকদের

অভিভাবকদের মতে, নতুন কারিকুলামে বেশ কয়েকটি শ্রেণিতে পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকার কারণে বই বিমুখ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। আসক্ত হয়ে পড়ছেন ডিজিটাল ডিভাইসে। এতে করে মেধা বিকাশে বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে বলে মন্তব্য করছেন তারা। পাশাপাশি নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের তথ্যমতে, গেল বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। চলতি বছরে বাস্তবায়ন করা হয়েছে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে ও ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে ধাপে ধাপে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার কথা রয়েছে

 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুুদ বলেন, আমাদের ভাষায় পরীক্ষাটাকে এসেসমেন্ট বলা হয়ে থাকে। এখন নতুন কারিকুলামে পরিভাষা পরিবর্তন হয়েছে। আগে বছরে দুইটা ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা নেওয়া হতো। তবে এটি এখন ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন হবে। প্রত্যেক শ্রেণির শিক্ষক প্রতিদিনই পরীক্ষা নেবেন। ওইটা আবার সার্ভারে ইনপুট দেবেন। পাশাপাশি দালিলিক রেকর্ডও রাখবেন তিনি। আগে বছরে যেটা দুই থেকে তিনবার করতেন শিক্ষকেরা এখন সেই কাজটি প্রতিদিনই করবেন। বছরের শেষে এটার উপর শিক্ষকরা তাদের মূল্যায়ন করবেন।

 

তিনি আরও বলেন, এখন এই কাজটা কঠিন বলে মনে হবে। কারণ আমরা এই কারিকুলামে অভ্যস্থ না। তবে উন্নত বিশ্বে এইভাবেই পড়াশোনা করানো হয়। এটার মাধ্যমে বাস্তবমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হবে একজন শিক্ষার্থী। মুখস্ত আর বাস্তব শিক্ষার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

এই কর্মকর্তা বলেন, মূল লক্ষ্য হলো এসএসসি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকবে না। একাদশ শ্রেণিতে যাওয়ার পর গ্রুপিং হবে। এর আগে বিদেশে যেভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলে সেভাবে সবার জন্য ওই শিক্ষাক্রম চালু করা। মূল বিষয় হলো যে কোনো দুইটা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ট্রেড শিখতে হবে। যাতে করে জীবিকা ধারণ করতে তার সহজ হয়। আমাদের অনেকেই বিষয়টা বুঝতে পারছেন না। যার কারণে অনেকেই এই বিষয়টার বিরোধীতা করছেন।

নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত শিক্ষক ও অবকাঠামো। এই দুটো খুবই প্রয়োজন। যেহেতু একজন শিক্ষক সকল শিক্ষার্থীকে একেক করে সুপারভিশন করবেন, সেক্ষেত্রে প্রতিটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। বর্তমানে যেখানে একটি শ্রেণিতে ৭০ থেকে ৮০ জন রয়েছেন সেটি কমিয়ে ২৫ থেকে ৩০ এ আনতে হবে। আর এই কাজটি করলে শ্রেণি সংখ্যাও বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন হবে আরও অবকাঠামো। যেহেতু নতুন শিক্ষাক্রম তাই একটা হিজিবিজি মনে হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের ভুল ত্রুটি ও চেষ্টা সমন্বয়ে পরবর্তীতে সেটিকে আরও ঢালাওভাবে সাজানোর প্রয়োজন রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা এখন আনন্দের সঙ্গেই পড়াশোনা করছেন। তাদের মানসিক চাপ কমেছে। পাশাপাশি শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্যও কমছে।